চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পটভূমি :
১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্ব আদায়ের জন্য পাঁচসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। এই ব্যবস্থায় উচ্চহারে ডাক নিয়ে জমির বন্দোবস্ত নিলেও সেই অনুপাতে রাজস্ব আদায় হতাে না। নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকায় জমিদাররা কৃষকদের কাছ থেকে প্রয়ােজনে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করত । অথচ কৃষকদের উন্নয়ন বা জমির উন্নয়নের প্রতি তাদের কোনাে লক্ষ ছিল না। ফলে নির্যাতনের ভয়ে কৃষকরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেত। বছরের পর বছর জমি অনাবাদি থাকায় জমির দাম কমে যেত। এ অবস্থায় হেস্টিংস জমিদারদের সঙ্গে | একসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। কিন্তু, এ ব্যবস্থায়ও সরকার, জমিদার, প্রজা কারাে কোনাে ধরনের উপকার
হয়নি। পরবর্তীকালে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট নতুন | ব্যবস্থা উদ্ভাবনের প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করে। ১৭৮৪ সালে পিটের ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পার্লামেন্টে গৃহীত হয়।
বাংলা, বিহার, উড়িষ্যায় স্থায়ী নিয়ম-কানুন প্রবর্তনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব ব্যবস্থা চালুর জন্য | কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয় । ১৭৮৯ সালে কর্নওয়ালিস জমিদারদের দশসালা বন্দোবস্ত দিতে প্রস্তুতি নেন। ইংল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ জমিদারদের সঙ্গে বন্দোবস্তের অনুমতি প্রদান করলে কর্নওয়ালিস এই অনুমােদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ সালে দশসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। তবে এর সঙ্গে এই প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন যে, কোম্পানির ডাইরেক্টর সভার অনুমােদন পেলে দশসালা বন্দোবস্তই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত হবে। ১৭৯২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই দশসালা বন্দোবস্ত বাের্ড অব ডাইরেক্টরস কর্তৃক অনুমােদন লাভ করে। | ১৭৯৩ সালের ২২শে মার্চ কর্নওয়ালিস দশসালা বন্দোবস্তুকে চিরস্থায়ী বলে ঘােষণা করেন।
0 মন্তব্যসমূহ